যাদের পড়াশোনায় আগ্রহ কম বা যাদের পড়তে ইচ্ছে করে না, তাদের জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ উপদেশ:
1. পড়াশোনার উদ্দেশ্য বুঝুন
পড়াশোনার উদ্দেশ্য শুধু পরীক্ষায় ভালো করা নয়। এটা আপনার জীবনের ভবিষ্যৎ গড়ার একটি অংশ। আপনার সফলতা, ক্যারিয়ার এবং ব্যক্তিগত উন্নতির জন্য পড়াশোনা অপরিহার্য। তাই, যখনই পড়তে বসবেন, মনে রাখুন যে আপনি ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে প্রস্তুত করছেন। আপনার স্বপ্ন পূরণের জন্য পড়াশোনা একটি শক্তিশালী হাতিয়ার।
2. ছোট লক্ষ্য স্থির করুন
বড় লক্ষ্য দেখে কখনও হতাশ হবেন না। আপনি যদি মনে করেন যে পড়াশোনার পুরো বিষয় একসাথে শেষ করতে পারবেন না, তাহলে ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন। যেমন, আজকের জন্য একটি নির্দিষ্ট অধ্যায় বা বিষয় পড়া শেষ করার সিদ্ধান্ত নিন। একে একে এই ছোট লক্ষ্যগুলো পূর্ণ করলে বড় লক্ষ্যও পূর্ণ হবে।
3. অগ্রাধিকারের তালিকা তৈরি করুন
কখনও কখনও পড়তে ইচ্ছে না হওয়ার কারণ হলো চাপ এবং অপ্রাসঙ্গিক কাজের মাঝে পড়ে যাওয়া। আপনি আপনার দৈনন্দিন কাজগুলো সাজান। আপনার পড়াশোনাকে অগ্রাধিকার দিন, তারপরে অন্যান্য কাজ করুন। এতে আপনার সময়ও বাঁচবে এবং আপনি মনোযোগ সহকারে পড়তে পারবেন।
4. মনোযোগের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করুন
পড়াশোনার জন্য একটি নির্দিষ্ট সময়সূচী তৈরি করুন এবং নিয়মিত সেই সময় অনুযায়ী পড়ুন। একটা রুটিন তৈরি করতে পারেন, যেমন সকালে ১ ঘণ্টা এবং সন্ধ্যায় ১ ঘণ্টা পড়বেন। এভাবে, আপনি কোন এক সময়ে পড়তে অভ্যস্ত হয়ে উঠবেন।
5. পড়ার মাঝে বিরতি নিন
আপনি যদি একটানা অনেক সময় পড়তে চান, তবে মাঝে মাঝে বিরতি নেওয়া খুব জরুরি। একঘেয়েমি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য প্রতি ৩০ মিনিট পর একটি ছোট বিরতি নিন। এতে আপনার মনোযোগ বাড়বে এবং পড়া আরও উপভোগ্য হবে।
6. পড়াশোনাকে উপভোগ্য করুন
পড়াশোনাকে চাপ হিসেবে না দেখে, এটিকে কিছুটা উপভোগ করার চেষ্টা করুন। একটি নতুন বিষয় শিখতে গিয়ে আনন্দ খুঁজুন। নিজেকে চ্যালেঞ্জ দিন, নতুন কিছু শিখুন এবং সেগুলোর প্রয়োগ কিভাবে আপনার জীবনে কাজে আসবে তা ভাবুন।
7. স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন
আপনার শরীর এবং মন ভালো না থাকলে পড়াশোনায় মনোযোগ দেওয়া কঠিন। তাই স্বাস্থ্যকর খাবার খান, পর্যাপ্ত ঘুমান এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন। এটা আপনাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে চনমনে রাখবে, যা পড়াশোনার জন্য প্রয়োজন।
8. আপনার স্বপ্নের কথা মনে করুন
আপনার স্বপ্ন এবং লক্ষ্যকে সবসময় মনে রাখুন। আপনি যে ক্যারিয়ার গড়তে চান, যে কাজ করতে চান, বা যেখানেই সফল হতে চান, তার জন্য পড়াশোনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই লক্ষ্যগুলোর কথা মনে করলে পড়তে আগ্রহ বাড়বে।
9. সময়ের মূল্য বোঝেন
সময় কখনও ফিরে আসে না। আপনি আজ যে সময়টি অপচয় করছেন, তা কখনোই ফিরে পাবেন না। তাই পড়াশোনার জন্য সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের সঠিক ব্যবহারে আপনি অনেক বড় কিছু অর্জন করতে পারবেন।
10. আত্মবিশ্বাস রাখুন
যাদের পড়াশোনার প্রতি আগ্রহ কম, তাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আত্মবিশ্বাস। আপনি যদি মনে করেন যে আপনি পড়াশোনায় ভালো করতে পারবেন, তবে তা অবশ্যই সম্ভব। যদি আপনি সত্যিই নিজের ওপর বিশ্বাস করেন এবং নিয়মিত চেষ্টা করেন, তাহলে আপনি সফল হবেন।
উপসংহার:
পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে না পারা স্বাভাবিক, তবে তার মানে এই নয় যে আপনি সফল হতে পারবেন না। নিয়মিত পরিশ্রম, সময় ব্যবস্থাপনা, ছোট লক্ষ্য স্থির করা এবং আত্মবিশ্বাসী থাকা আপনাকে পড়াশোনায় আগ্রহী করে তুলবে। একসময় আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন, পড়াশোনা আপনার জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
আপনার কাছে যা লক্ষ্য, সেই লক্ষ্য অর্জনের পথে পড়াশোনা একটি শক্তিশালী হাতিয়ার, তাই একে উপভোগ করুন।
লিখেছেন, মোঃ কামরুল হাসান শাহিন, সহকারী শিক্ষক( গনিত), চর আর কলমী গাফুরিয়া দাখিল মাদ্রাসা